ঢাকা, ০৮ জুলাই, ২০২৫
ProthomDesh24

ইরান যুদ্ধ থামালেও গাজায় নির্বিকার ট্রাম্প

ইরান যুদ্ধ থামালেও গাজায় নির্বিকার ট্রাম্প

ইরান যুদ্ধ থামালেও গাজায় নির্বিকার ট্রাম্প

Publish : 04:12 AM, 27 June 2025.
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে আপাতত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আবারও গাজার দিকে ফিরছে, যেখানে প্রতিদিনই বাড়ছে ফিলিস্তিনি প্রাণহানি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ প্রয়োগ করে সফল হলেও গাজায় ইসরায়েলকে থামাতে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নিচ্ছেন না। আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক মাইরাভ জোনসেইন বলেন, ‘ট্রাম্প চাইলে নেতানিয়াহুকে থামাতে পারেন। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, তিনি ইসরায়েলকে গাজায় যা ইচ্ছা করার পূর্ণ ছাড় দিয়েছেন।’

এদিকে সহিংসতা আরও বেড়েছে গাজায়। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৯০ জন। বুধবার প্রাণ গেছে ৪৫ জনের, যাদের অনেকেই ত্রাণ সহায়তা নিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৬ হাজার ১৫৭ ফিলিস্তিনি।

গাজা প্রশাসনের তথ্যমতে, গত চার সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে সহায়তার জন্য গিয়ে ৫৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪ হাজারের বেশি। এ ছাড়া নিখোঁজ হয়েছেন ৩৯ জন। এই কেন্দ্রগুলোকে ‘মৃত্যুকেন্দ্র’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে গাজা কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘খাদ্যকে গণহত্যার অস্ত্রে রূপান্তরিত করেছে ইসরায়েল।’

তবে জিএইচএফ দাবি করছে, তারা এখন পর্যন্ত ৪৪ মিলিয়ন খাবার প্যাকেট সহায়তা হিসেবে বিতরণ করেছে। কিন্তু ইউনিসেফসহ অনেক মানবাধিকার সংস্থাই এই ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে শিশুহত্যা এবং মানবিক নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, জিএইচএফের খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে হওয়া ১৯টি প্রাণঘাতী হামলার মধ্যে অন্তত ১০টিতে হতাহতদের অধিকাংশই শিশু।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বোমা হামলা, অবরোধ ও জ্বালানির অভাবে গাজায় প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়েছে পানির সরবরাহ ব্যবস্থা। এমনকি পানির সংকটে পড়েছেন ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবীরাও। এর ফলে তৃষ্ণায় মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়েছেন হাজার হাজার গাজাবাসী।

এমন অবস্থায় যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে হামাস জানিয়েছে, কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চললেও এখনও কোনো কার্যকর প্রস্তাব পায়নি তারা। ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি ‘খুব কাছাকাছি’ হলেও বাস্তবে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

এএফপি জানায়, অধিকৃত পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা ক্রমেই বাড়ছে। রামাল্লার উত্তর-পূর্বে কফর মালেক গ্রামে গতকাল দখলদারদের চালানো হামলায় অন্তত তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। স্থানীয় সূত্রে আলজাজিরা জানিয়েছে, হামলাকারীরা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পাহারায় ফিলিস্তিনিদের গ্রামটিতে ঢুকে নির্বিচারে গুলি ছোড়ে ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে।

একই দিনে জেরিকোর কাছে আল-মালিহাত গ্রামে এবং আল-মিনিয়া গ্রামের কাছে ফিলিস্তিনি যানবাহনে পাথর নিক্ষেপ করে দখলদার ইসরায়েলিরা। এসব হামলার সময়ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের পাশে ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ইসরায়েলের এই ‘দ্বৈত ভূমিকা’ যেমন একদিকে সেনা পাহারায় দখলদারদের তাণ্ডব, অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের ওপর দমনপীড়ন পশ্চিম তীরের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে আরও সংকটাপন্ন করে তুলছে।

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির আবারও গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সঙ্গে সংঘাতে বিরতি নিশ্চিত হওয়ায় এখন ইসরায়েলের নজর আবার পুরোপুরি গাজার হত্যাযজ্ঞে ফিরেছে।

-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@ProthomDesh24.com

আন্তর্জাতিক বিভাগের অন্যান্য খবর

Follow Us

সম্পাদক
সৈয়দ মোমেনুজ্জামান

ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
ইব্রাহিম শরীফ মুন্না

বার্তা সম্পাদক
মাহবুব আলম সৈকত

ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
Email: news@prothomdesh24.com

©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || প্রথম দেশ

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd